Free Palestine

 

Free🇵🇸 Palestine 🇵🇸



“ (হে নবী) বলুন, কর! (অর্থাৎ আমল করুন!) তারপর আল্লাহ আপনার কাজ দেখবেন - যেমন তাঁর রসূল এবং মুমিনগণ - এবং তারপর আপনি অদৃশ্য ও দৃশ্যের জ্ঞানীর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবেন, তারপর তিনি আপনাকে জানিয়ে দেবেন আপনি যা করতে। "

(সূরা আত-তওবা; 9:105)

বিদ্বেষী ইহুদিবাদী দখলদাররা গাজার মুসলমানদের উপর নিরলসভাবে বোমাবর্ষণ করেছে, জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক প্রয়োজনীয়তা যেমন পানি, খাদ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি বন্ধ করে দিয়েছে এবং শিশু, নারী, বৃদ্ধ এমনকি ইনকিউবেটরে থাকা শিশু নির্বিশেষে কাউকে রেহাই দেয়নি। তথাকথিত মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের চ্যাম্পিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমাদের সজাগ দৃষ্টিতে এই হত্যাকাণ্ডের অভিযান চলছে। বাস্তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থের উপর ভিত্তি করে বেছে বেছে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইন ব্যবহার করে যা আক্রমণকারীদের উপর প্রয়োগ করা যায় না।

পশ্চিমারা বারবার প্রমাণ করেছে, তাদের উচ্চারিত বিদ্বেষের শব্দ দ্বারা, মুসলমানদের সাথে আচরণ করার সময় আইনের প্রয়োগযোগ্যতা অকার্যকর কারণ তারা মুসলমানদেরকে পশু এবং বর্বর বলে মনে করে, তাহলে আমরা কেন তাদের কাঠামো এবং নীতির দিকে আকৃষ্ট করব?
পশ্চিমা সমাধানগুলি আমাদের প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে৷

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমারা তাদের নিজস্ব আইন প্রয়োগ করে না বা মেনে চলে না, তবুও এটা দুঃখজনক যে আন্তর্জাতিক আইনের সবচেয়ে প্রবল অনুসারী মুসলমান, কারণ যখনই নৃশংসতা ঘটে তখন তাদের ক্রিয়াকলাপ এটিকে প্রতিফলিত করে। মুসলমানদের উপলব্ধি করা উচিত যে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইন তাদের ন্যায়বিচারের তৃষ্ণা মেটাতে এবং নিপীড়ন তুলে নেওয়ার জন্য তাদের জলের জায়গায় নিয়ে যাবে এমন পথ নয়। এটি আসলে একটি বিষাক্ত পথ যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মহান প্রতারক এবং তার মিত্ররা মুসলমানদেরকে বিপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি করেছে এবং দখলকে সিমেন্ট করে একটি মারাত্মক আঘাত হিসাবে পরিবেশন করেছে। ফলস্বরূপ, অনেক আন্তরিক মুসলমান তাদের কর্মের প্রভাব সম্পর্কে অবগত নন এবং এটি কোন লক্ষ্যে কাজ করে। কেউ কেউ তাদের স্থানীয় রাজনীতিবিদ বা জাতিসংঘের কাছে চিঠি লিখতে অনুরোধ করেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে চাপ দিয়েছেন, পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন, প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছেন, পশ্চিমা পণ্য বয়কট করেছেন ইত্যাদি। কিন্তু কোন কাঠামো থেকে সমাধান আসবে বলে আপনি মনে করেন?
শরীয়াহ দ্বারা আপনার কর্মের সঠিকতা যাচাই করুন

কেউ কেউ বলেন , 'অ্যাকশন যতই ছোট হোক না কেন আমরা আমাদের কাজই করছি' , কিন্তু শরিয়াহ দৃষ্টিকোণ থেকে যে কাজটি করা হচ্ছে তা সঠিক কিনা তা যাচাই করতে ব্যর্থ হন। এই ধরনের কর্ম কোন চিন্তা বর্জিত এবং শেষ উদ্দেশ্য অর্জনের সাথে যুক্ত নয়। এটি একটি ভুল চিন্তার উপর ভিত্তি করে। কেউ তাদের স্বাভাবিক জীবনে এলোমেলোভাবে কোনো ক্রিয়া সম্পাদন করে না, তা তাদের দৈনন্দিন কাজ বা একাডেমিক কর্মকাণ্ডের মধ্যেই হোক না কেন, বরং একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা ফলাফল অর্জনের জন্য ক্রিয়াটি গভীরভাবে চিন্তা করা হয়। প্রবন্ধ লেখা, পরীক্ষার জন্য পড়াশুনা বা লাভের জন্য কোথায় এবং কিভাবে বিনিয়োগ করতে হবে ইত্যাদি। তাহলে আমরা যখন উম্মাহর সামনে সমস্যাপূর্ণ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছি তখন কেন আমরা এলোমেলোভাবে কাজ করব?
সমস্ত মুসলমান জানে যে ফিলিস্তিনের সমস্যা হল এটি একটি দখলকৃত ভূমি এবং এর সমাধান হল দখল অপসারণ করা। সুতরাং, আমাদের সমস্ত কর্মের লক্ষ্য হওয়া উচিত দখল অপসারণ, তা যত ছোট বা বড় হোক না কেন, যতক্ষণ না তা শরীয়তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কথা বলার মাধ্যমে, লেখার মাধ্যমে বা প্রভাবিত করার মাধ্যমেই হোক, কারণ এটি সবই একই শেষ লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যের দিকে কাজ করার লক্ষ্যে।

ছোট পাখি এবং আগুনের গল্প

বনের আগুন নেভানোর চেষ্টা করা ছোট পাখির গল্প মনে আসে। আগুন জ্বলে উঠার সাথে সাথে একটি ছোট পাখি নদীতে উড়ে গেল এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা করার জন্য তার ঠোঁটে জল ঢুকিয়ে দিল। যতবারই পাখি আগুনে জল ঢালত, একটা টিকটিকি আগুনে ফুঁ দিয়ে সেটাকে আরও মারাত্মক করে তুলত। টিকটিকি হেসে পাখিটিকে ঠাট্টা করে জিজ্ঞেস করল; 'তোমার জল আগুনে কি করবে?'

পাখিটি উত্তর দিল; 'আমি জানি না এটি যথেষ্ট কি না তবে এটি আমার সর্বোত্তম ক্ষমতা এবং বিচারের দিন যখন আল্লাহ আমাকে প্রশ্ন করবেন যে আমি আগুন নিভানোর জন্য কী করেছি , আমি আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারি যে আমি করেছি। সঠিক পদক্ষেপ এবং আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। '

যেমন, এই সাধারণ উপমা থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে যা আমরা হাইলাইট করতে পারি:

1) আগুন নেভানোর জন্য পাখিটি সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছিল।

2) পাখিটি তার সামর্থ্যের মধ্যে যা ছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে তার ক্ষমতার সর্বোত্তম ক্রিয়াটি চালিয়েছে।

3) পাখিটি ফলাফল সম্পর্কে উদ্বিগ্ন ছিল না, কারণ এটি আল্লাহর হাতে, তবে কেবল আল্লাহর কাছে উত্তর দেওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।

4) পাখি ভালোর পাশে ছিল, আগুন নিভানোর চেষ্টা করছিল। যখন টিকটিকি মন্দের পক্ষে ছিল, এটি আরও তীব্র করার চেষ্টা করছে।

বেড়া বন্ধ করুন এবং আন্তরিকতার সাথে কাজ করুন!

হে মুসলমানগণ! শেষ উদ্দেশ্য বোঝার জন্য আমাদের ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যাটি বুঝতে হবে। তবেই আমরা নিশ্চিত করব যে আমরা যে কাজগুলি করছি তা শরীয়তের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ সঠিক পদক্ষেপ, এবং এটি কাঙ্ক্ষিত ইসলামী সমাধানের দিকে নিয়ে যাবে। অন্যথায়, এলোমেলোভাবে কোনো চিন্তাভাবনা ছাড়াই কাজ করা কেবলমাত্র এমন একটি সমাধানকে সমর্থন করবে যা ইসলাম থেকে নয়, এবং অসাবধানতাবশত দখলকে দীর্ঘায়িত করবে, যা ইসলামের শত্রুদের উদ্দেশ্য।

এছাড়াও, আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) আমাদের ফলাফল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন না কারণ এগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী এবং তিনি যখন ইচ্ছা মুসলমানদের বিজয় দান করবেন। কিন্তু আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) আমাদের যা জিজ্ঞাসা করবেন এবং এতে কোন সন্দেহ নেই, সমাধানের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে আমরা কী ভূমিকা পালন করেছি। এখন দাঁড়ানো এবং গণনা করা সময়! আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে আমরা কী কাজ করেছি, তা ইসলামের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল কিনা এবং সঠিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল কিনা তার জন্য আমরা জবাবদিহি করব।

এবং অবশেষে, এটি আর বেড়াতে বসে থাকার সময় নয়। এখন সময় এসেছে আমরা বেড়া থেকে নেমে পাশে দাঁড়াই। আর এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমাদের উচিত হবে না মিথ্যা বা অন্ধকার ও মন্দ শক্তির পক্ষে, বরং সর্বদা হকের (সত্য) পক্ষে, মুসলমানদের পক্ষে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষে থাকা উচিত। রাসূল (সা.)।

"নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, আমরা কারো সৎকাজের প্রতিদান নষ্ট করি না।"

( সূরা আল-কাহফ; 18:30 )